শৈশবে হারানো মার্বেলের মতোই বিদগ্ধ কষ্টে
এ শীতেই অধিকার হারালাম।
তাই গেলো রাতের গভীর অন্ধকারটুকু ভিক্ষায় পেয়ে
রিপু করা দুঃখগুলো বিছিয়ে রেখেছিলাম দক্ষিণের জানালায়। কুয়াশায় ভেজা কাঁচের গায়ে বোলতার বিষ পুঁতে
শহরের এই বিষাক্ত রাতকে পুষেছি খুব মমতায়,
জানি দলছুট কান্নাগুলোর কোন স্বর্গ, নরক থাকে না,
কেবলই কিছু মরণযন্ত্রনার কামড়

নেবো নাকি না নেবোনা ,
সব কিছুই তো ছেড়ে দিলাম
জমিজিরেত নাকের নোলক ভাতের হাড়ি
ঘরের মানুষ কোন কিছুর নেই দাবি আর । নিতে গেলেই জমি ফেটে দু’ভাগ যে হয়
ভাতের হাঁড়ি পুড়তে থাকে কাঠ উনুনে
নাকের নোলক ভাসতে থাকে
জল দীঘিতে স্নানের শেষে ।
আমার কি আর মনের

একটা রাতের মতো তার লাবন্যময় পথচলা
যেন মেঘহীন নীলিমায় জ্বলজ্বলে তারাদের শতকলা
আলো আঁধারের কী দারুণ কারুকাজে ভরা
কাজলের চোখদুটো তার স্বপ্ন আলোক ঝরা,
সে প্রসন্ন উজ্জ্বলতায় পূর্ণতা খুঁজে পায়
অস্বীকৃত অপ্রিয় দিন স্বর্গোদ্যান ছেড়ে যায় । এক অভূতপূর্ব আলোককুসুম ছোট্ট রশ্মি দিয়ে
আধেকটা বিলীন হয়েছে যে তার

বিশটাকা একহালি
খুব বেশি দাম নয়
একহালি কিনলেই
বেশ ভালো নাম হয়। বাজারের থলেতে
পেঁয়াজটা না রেখে
হাত ব্যাগটায় রাখি
কেউ যেন না দেখে। চায় যদি আধখানা
কিকরে যে দেই তারে
তার চেয়ে এই ভালো
থাকুক না চুপিসারে। সোনাদানা ফেলে রেখে
পেঁয়াজের সঞ্চয়
বাড়াতেই করছি যে

দেনার দায়ে রোদ বিকোলাম,
মেঘ বিকোলাম, সমুদ্দুর আর পাহাড়টাও,
ঘরের খুঁটি চরের মাটি, মাথার উপর আকাশটাও,
দেনা তো আর শোধ হয়না শোধ হয়না
জন্মদাগের ভুলটুকু এই কপালটাও আর সয়না । রঙে রঙে ভেসে যাওয়া সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত বিকিয়ে দিয়ে
খড়ির আগুন দরদাম হীন কিনতে গেলাম,
কিনতে

তুমি আমাকে আড়াল করেছিলে
শিল নোড়ায় অন্ধকার বেঁটে বেঁটে
আমি তোমাকে মুছে দিয়েছি অস্তমিত নবমীর চাঁদের মতো।
তুমি তো জানো নক্ষত্রে আগুন লাগলে সমুদ্র বিবস্ত্র হয়
অতীত আড়াল হলে সাদা পৃষ্ঠাগুলো নিরুদ্দিষ্ট হয় জীবন থেকে,
সেখানে আর নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায়না। বিশ্বাসের সুতোয় বাঁধা ছিল আমার

ভোরের সানকিতে ভাঁপ ওঠা সরলতার ছোঁয়া
এখন আর কিছুতেই খুঁজে পাইনা
কি যেন হারায় প্রতিদিন, প্রতিক্ষণে ;
পাড়ভাঙা মাটির তলপেটে হারায় অঙ্কুরিত সরল কবিতার ঘ্রাণ,
নিঃশব্দের আকাশ, শিশিরের ছদ্মনাম, আলজিভের ত্রস্ত পিপাসা
সবই যেন শুধু হারিয়েই যায়। মধ্যবিত্ত সময়ের ভাঁজে দেখি আঁটকুড়ে নদীর গর্ভপাত
বিবস্ত্র

আমার শহরে বৃষ্টি নেমেছে পথঘাট ডুবে একাকার
তেতলার ছাদ ভিজছে সাথে সৌখিন পাতাবাহার।
সুনসান পথ রিকশা দু’চারেক ভেজা বৃষ্টি মানুষ
হুডের ভেতরে চকচকে সুখ গানে ভেজা ‘বেলাবোস’,
দু-চোখে কতোনা স্বপ্ন খেলে গিটারের মৃদু সুর
চাকরীর কথা থাকনা এখন সবকিছু থাক দূর। বৃষ্টি আমার শহর কিনেছে বেচে দিয়ে

এটা কোন কবিতা নয়
এটা লাশের কফিনে জমে থাকা বিষাক্ত আর্তনাদ ,
মৃত্যুতে চুবানো নক্ষত্রের না জন্মানো দুধশ্বাস।
এটা কোন কবিতা নয়,
খুন হয়ে যাওয়া বেওয়ারিশ রাতের ক্লান্ত স্থাপত্য এটা,
জঠর ছিঁড়ে বিকৃত করা
এক রক্তাক্ত মায়ের জীবন্ত শেষকৃত্যের ছবি। এগুলো কখনো কবিতা হয়না,
চালচুলোহীন এক কবির কাতর

কানামাছি ভোঁ ভোঁ
যারে পাস তারে ছোঁ,
কানামাছি বল নারে পার্থের দোষ কি,
গণপিটুনির মতো মজাদার ঘুষ কি? জল পড়ে পাতা নড়ে
পার্থকে মনে পড়ে,
গণপিটুনিতে মরে তসলিমা সস্তা
পড়শীর ছাদে হাসে পার্থের বস্তা। বাক বাকুম পায়রা
মাথায় দিয়ে টায়রা,
এডিসের তান্ডবে দিশেহারা দেশবাসী,
জনগণ ছিঁড়ছে নিজেদের

একটা শহরে এতো মানুষ থাকতে পারেনা,
শহরের সাদা রেলিং জুড়ে ছিপছিপে ঘূর্ণির মতোন মানুষ
ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটন্ত মানুষের পায়ে ও কপালে যেন দীর্ঘ সুনামিগন্ধ
মানুষের তুফান গিলে খাচ্ছে শহরের সবগুলো ঋতু, মাটি ও হৃদপিণ্ড। এতো মানুষ, কেবল মানুষ
মানুষের পিঠে মানুষ
মানুষের পায়ে ও ত্বকে মানুষ,
দলে দলে

আধুলিটা আকাশের দিকে বিদ্যুৎ গতিতে ছুটে চলেছে, ক্রমাগত ছুটছেই। বিশাল বিশাল বৃক্ষ পল্লবের মাথা ছাড়িয়ে, বাতাসকে পাশ কাটিয়ে ছুটেই চলেছে। ফিরে আসার নামটিও নেই। নোলক স্তব্ধ হয়ে বসে আছে, কোঁকড়ানো যন্ত্রণা পরবাসী অস্তিত্বে জমা রেখে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে, পাণ্ডুবর্ণ বিষণ্ন তার মুখ। আপন মনেই কথা

যখন মেয়েদের বুকের ভেতরে তৃষ্ণার কঠিন অনুবাদ,
জলরঙ জলাশয়ে নামে একদল জোনাকির গন্ধ ,
হা পিত্যেশের শহরে
কোন চাঁদচিঠি মেয়েদের ঘুমের মসৃণে পৌঁছায় না ,
শুধু বুকের গভীরে শিষ দেয় গতবসন্তের অলীক চাহনী । এখনো আকাশে মেয়েদের পালক ফোটেনি ,
এখনো মেঘের কাছে মেয়েদের চোখজল ফর্সা হয়নি

কেউ তো জানেনা
বিছানার পাশে কাঁচের জানালা খোলা
তার ওপাশে আকাশ ছিল যে নীল,
ইটের দম্ভ ধূসর মাটিকে ছুঁয়ে
আকাশের বুকে এঁটে দিলো যেই খিল;
সুপারীর সিঁথি ঢাকলো দুখের পালকে
বর্ষাতি রঙ রামধনু এঁকে দিলোনা,
ইট পাথরের কর্কশ ধ্বনিগুলো
ঘাসফড়িংএর উল্লাস মেখে নিলোনা। ২) কেউ তো জানে না
সেদিনই আমার ঘুঘুর সুরটা হারায়,
জোনাকির