তুমি এতো দুঃখী কেন মেয়ে!
নিস্পাপ সলজ্জ চাহনি- মোহিনীর। যুবকের কন্ঠে যেন একটা ঢেউ।
আবারো ভরাট আবেগ প্রতিমূর্ত- প্রশ্ন
চুপ থেকোনা মেয়ে। বলো আমায়। মোহিনী জামরুল গাছের দিকে
তাকালো এক পলক।
দৃঢ় কন্ঠে ধ্বনিত হলো; আমি মোহিনী। সে তো জানি মানবী,
আকাশের ওই নীল

নিপুণিকার সনদ এঁটে
সেরেছি সব কাজ, সব দায়ভার-
শুধু আমার দিকে আমি
ফিরে চাইনি একবারও
– পাইনি অবসর। যে যার মত নিয়ে চলে গেছে
যেমন গন্তব্য যার
আর আমি একাকী প্রান্তে-
তাৎপর্যহীন জীবনের তাৎপর্য খুঁজতে খুঁজতে
হচ্ছি অস্থিচর্মসার। রবার্ট ফ্রষ্ট তুমি সত্য বলেছ-

তুমি যদি কথা বল, অরণ্য উৎকীর্ণ হয়ে থাকে
তারার তিমির-জ্বলা ডাক দেয় শাখা-প্রশাখাকে। তুমি যদি কথা বল, সমুদ্রসৈকতে বালিয়াড়ি
আগ্রহে চঞ্চল হয়, যদি সুর ভেসে আসে তার-ই। তুমি যদি গান গাও, সে-গানে বিহঙ্গ পাখা নাড়ে,
তোমার কাকলি শুনে শীতার্ত বৃক্ষেরা পাতা ছাড়ে। তুমি

এবার হয়েছে সন্ধ্যা। সারাদিন ভেঙ্গেছো পাথর
পাহাড়ের কোলে
আষাঢ়ের বৃষ্টি শেষ হয়ে গেল শালের জঙ্গলে
তোমারও তো শ্রান্ত হলো মুঠি
অন্যায় হবে না- নাও ছুটি
বিদেশেই চলো
যে- কথা বলোনি আগে, এ- বছর সেই কথা বলো। শ্রাবণের মেঘ কি মন্থর !!
তোমার

ইদানীং অনেকেই সৃষ্টি করে-
প্রতিষ্ঠিত করে হৃদয়ের বিচ্ছিন্ন যুক্তি
উড়িয়ে দিতে চায় নীল বিহঙ্গে
হৃদ কেন্দ্রিক উচ্চারণ গুলো
কী সংক্ষিপ্ত অভিনবত্বে
ছুঁড়ে দেয় বিজ্ঞের বিলাসিতায়। ঠোঁটে তুলে নেন তাম্রকূট
নয়নে ধরেন উদাসীনতা বিস্তর
দেহে অবহেলার পরিচ্ছাপ; বিরোধ গড়েন স্বয়ং স্বকীয়তার সংগে
হয়ে ওঠেন

প্রাচীন এ দৃশ্যপথ:
প্রত্যহ সমুদ্র-শব্দে জাগে সমতট,
অরণ্যে সবুজ দিন আসে,
রাত্রিরা তারায় তীব্র আদিম আকাশে।
কোনো এক প্রাগৈতিহাসিক
ভাদ্রের পদ্মায় আজও দেখে গেল রৌদ্রের ঝিলিক-
দিগন্তে মেঘের ছবি অদ্ভুত রেখায় আজও আছে-
কালো-নীলে রাঙা পাখি উড়ে যায়
এক বুনো গাছ

একটি মানুষের মধ্যে আমি
এক আকাশ অন্ধকার দেখেছিলাম। কতজনের সঙ্গেই ত মিশি,
ভালবাসি, ঘৃণা করি, থাকি উদাসীন।
তারা সব টুকরো টুকরো আলো
উজ্জ্বল কি স্তিমিত। তাদের চেনা যায়, পড়া যায়
মানেও পাওয়া যায় ছাড়াছাড়া।
তাদের সঙ্গে পরিচয় দিয়েই
জীবনের প্রাঞ্জল পুঁথি প্রতিদিন লেখা।

আকাশ নীল দেখলে খুব দূরে যেতে ইচ্ছে করে।
আর দূর ভাবলেই সমস্ত শব্দ ঝিনুকের মতো এক
সমুদ্রের ঢেউ- এ ওঠে পড়ে। মনে হয় ফিরতে ফিরতে
তোমার জন্য কিছু নিয়ে আসি। দেখি লাল ভেলভেটের সবচেয়ে উঁচু বেদীতে বসে আমার মা সাম্রাজ্য শাসন করছেন।

এক জীবন ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে অন্য জীবন গড়তে থাকি
এক জীবনের শূন্যতাকে অন্য জীবন ভরিয়ে তোলে,
এক জীবন জবুথবু, অন্য জীবন হাওয়ায় দোলে-
এক জীবন যেমন-তেমন, আরেক জীবন সাজিয়ে রাখি। নদীর জলে হাত রেখেছি, নদী আমায় ক্ষমা করে;
নারীর দেহে হাত রেখেছি, নারী

দিন যায়
সমস্ত আকাশ জুড়ে
যায় আমার দিন যায়
আমার সমস্ত দিন তাকিয়ে দেখা
সমস্ত দিনের ছায়া দিয়ে মাপা
দিন যায়
আমার দিন যায়। কে তুমি এ-পথে গেছ ভোরে
কে ফের সন্ধ্যায়।
নদীর আঁচল লাল
রাঙা ধুলো ওড়ে মাঠে মাঠে,
মুন্ডহীন

“হে বন্ধু, সবার চেয়ে চিনি তোমাকেই
এ কথায় পূর্ণ সত্য নেই।
চিনি আমি সংসারের শত সহস্রেরে
কাজের বা অকাজের ঘেরে
নির্দিষ্ট সীমায় যারা স্পষ্ট হয়ে জাগে,
প্রত্যহের ব্যবহারে লাগে,
প্রাপ্য যাহা হাতে দেয় তাই,
দানা যাহা তাহা নাহি পাই। অনন্তের সমুদ্রমন্হনে
গভীর রহস্য হতে তুমি এলে আমার জীবনে।
উঠিয়াছ অতলের অস্পষ্টতাখানি
আপনার

রাত্রীর বিষণ্ণ নীরবতা ভেঙ্গে যখন স্বপ্নীল চৈতন্য
নিয়ে ফোটে রোদের মঞ্জরী-
জীবনের মাঠে; রূপোলী বীজের ঘ্রাণ ভেসে আসে দূর
বনভূমি থেকে; বিরামহীন দ্রুতলয়ে ফুটতে থাকে ভোর- আলোকমন্ডিত পৃথিবী থেকে দ্রুত অন্ধকার সরে যায়,
জাগতিক বৃক্ষের বুক থেকে বিদায় নেয় রাত্রি, তখন আমি সৃষ্টির
দর্পনে রাখি

একটা জামা ছিলো আমার
রঙ তার লাল। আজীবন সাবান জলে যুদ্ধ হলো
বুক থেকে ঝড়লো রঙ
শতাব্দী পর তবু সে আজ
রয়ে গেল টুকটুকে লাল। এক বন্ধু ছিলো আমার।
কবিতা লেখায় ছিলো তার শখ।
নাম?