নাঙ্গা তলোয়ার হাতে খণ্ড-বিখণ্ড শুধু নয়
মলমের মানুষের খবর আমরা জানি
রাস্তায় পড়ে থাকা নিরন্ন মানুষের
জলের ছটফটানি মিটাতে
জলাধার খুঁড়ে আনা মানুষের খবর আমরা জানি।
এমন মানুষের খবর আমরা জানি
যার চোখে পৈতাকে হিন্দু লাগেনা
টুপি দেখে কাউকে মুসলমান ঠাওরে নেয় না
গির্জার ঘণ্টা
পথে হাঁটতে নেমেও কেউ পশ্চাৎ যায়,
দেখছি অহরহ। যে বালক বুকের বোতাম খুলে
দৌড়ে ফড়িং ধরবে; সে মক্তবে মুফতির
পাঠ নেয়। যে বালিকা বেণী দুলানো
হাসিতে জানাবে চাঁদের নিমন্ত্রণ; সে
আপাদমস্তক অন্ধকারে নিজেকে সুরক্ষিত ভাবে।
গতকাল যার টগবগানো রক্তে বিপ্লব সমাগত
ছিল আজ সে ক্ষমতার জুতো শুঁকে।
যার সৌম্যমূর্তি স্মরণে অনেক
নির্দয় মানুষের মনে কী
কান্না থাকে! খরার
চৌচির মাঠের গভীরে
জলের নহর থাকে জানি।
নির্দয় ভেবে এই যে
ফেলে চলে গেলে, যদি
ফিরে তাকাতে; দেখতে
আকাশ ভেঙ্গে ঝরছে জল।
দেখতে; উপচানো জলে
তলিয়ে যাচ্ছে নদী,
দেখতে; হাবুডুবু খেতে থাকা
নদী প্রাণপণ চেষ্টা করছে,
ভেসে থাকার চেষ্টা করছে।
নির্দয়ের হৃদয়েও থাকে জল
অনুভবের স্পর্শে সে জল
অবিরল ঝরতে পারে।
কাউকে
দ্রাক্ষার রস টক আমিও
কী জেনেছিলাম!
যেদিন চোখের সামনে
আকবরের বাইকে চড়লে, শাঁ করে
উঠে গেলে সদর রাস্তায়,
আকাশে কান্না দেখলাম।
পড়শির অধিকারে
বার বার গিয়েছি উঠানে,
নির্লজ্জ ভিখারির মত
হয়েছি নজরের কাঙ্গাল।
কৃপা পেলে বর্তে যেতাম
হে কৃপাময়ী!
ছেঁড়া ন্যাকড়ার
প্রতি রাজকুমারীর কোন
আসক্তি থাকে না, বড় কষ্টে
জেনেছিলাম। কষ্টে বুক
আমি বাংলাদেশের সমান, বয়সে। দুই চার মাস এদিক সেদিক হতে পারে। বাংলাদেশ এবং আমি একসাথে বড় হয়েছি। ৫০ বছরে দু’জনের তুলনা করলে দেখি আমাদের বড় হওয়া প্রায় অভিন্ন।
আমাদের জীবনে ঘাত প্রতিঘাত এসেছে, ঝড়, ঝঞ্ঝা এসেছে আবার আলো ঝলমলে অসংখ্য দিন
পৃথক চিন্তায় বেড়ে ওঠা দু’জন দু’দিকে গেছে
একজন আলো অভিমুখে হেঁটে হয়ে উঠেছে আলোকিত
অন্যজন বিপরীত আলোয় কোথায় যে তলিয়ে গেছে।
পুনরায় মিলনের সম্ভাবনা নেই, যদিও মিলে
আলোকিত জনের আলো অন্ধকার মিটাতে পারবে না
মনের গভীরে ভয়ানক কৃষ্ণপক্ষ, কোন আলো ভেদ করা
অসম্ভব।
আলোর কারবারি অহেতুক আলো
এইদিন আমাদের দিয়েছিল সূর্য
অধিকার আদায়ের সেই রণতূর্য
বেজেছিল এইদিন
অধিকারে সংগ্রামে আমরাই এইদিনে
নিজস্ব স্বত্বা নিজেকেই নেই চিনে
আঁধার মাড়িয়ে যেতে
আমরা দাঁড়িয়ে যাই
আমাদের স্বাধিকার আমরাই নেই কিনে।
এইদিনে পরিচয় করি উন্মুক্ত
ডুব দেই পুনরায় শিকড়ের গভীরে
এইদিনে দিক-ভুলা সেই সব পাখিরা
পুনরায় এঁকে যায় মানুষের ছবিরে।
এইদিন পিতা তাঁর তর্জনী
নদীর লোভে এতদূর এলাম
এতো দেখি ঘিঞ্জি গলি
মানুষের মাথায় মানুষের পা
এখানে নদী কই!
আমি ফিরে যাবো ভেবে
তোমার ছলছলানো চোখে
দেখলাম প্রবাহিত নদী
এই নদী কিভাবে এড়াই!
করোনাকাল একদিন অস্ত যাবে। অন্ধকার ভেদ করে ফুটবে আলো। ‘পাখি সব করে রব’ রাত্রি পোহাবে। রাখাল আবার মাঠে যাবে, আর শিশুরা ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে নিজ নিজ পাঠে মনোনিবেশ করবে। তাদের মনোনিবেশ আঁধারের ওপারে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাবে। করোনার বিসদৃশ সময়ের
জলের ভাষা সবাই পড়তে পারে না
যে পারে সে হয় দক্ষ সাঁতারু, জল
ছাপিয়ে পৌঁছাতে পারে মাছের বাড়ি
ডুব দিতে পারে জলের গভীরে।
গাছের ভাষা সবাই পড়তে পারে না
যে পারে সবুজের অভাবে কখনও
মিইয়ে যায় না, ফুসফুস দিয়ে যায়
অক্সিজেনের অবিরাম সরবরাহ।
বাতাসের
আমি ইদানীং মার্কা মারা হয়ে যাচ্ছি
কোন বিচিত্র নাই, নাই নতুন কোন চিন্তা।
মুখ খুললেই সবাই বুঝে নেয়
কি বলতে চাচ্ছি। হাত উঠালেই
বুঝে নেয় কোথায় আনুগত্য।
নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মে যাচ্ছে
অভ্যস্ত জীবনে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি।
অথচ প্রচুর সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়েছিলাম
তেজি ঘোড়ার দাপট ছিল শরীরে।
বদলে